বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতিক নিয়ে গত নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন কামাল আহমেদ।

গত রবিবার বিকেলে সহস্রাইল বাজারে একটি মারামারিকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ পরের দিন সোমবার বোয়ালমারী থানায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

আরো ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। ওই মামলায় শেখর ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি আশা চৌধুরী (৩০), শেখর ইউনিয়নের যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. রুমান মোল্যা (৩০), ঢাকা দারুস সালাম ১০ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মানিক (২৭), শেখর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আ’লীগের সদস্য আব্বাস মোল্যাকে (২৭) আসামি করা হয়।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, চেয়ারম্যান কামাল আহমেদের সহস্রাইল বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয়ে হামলা করে ভাংচুর, লুটপাট ও বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুর করা হয়।

মামলার ১ নম্বর আসামি সৈয়দ জিল্লুর রহমান ও যুবলীগ নেতা ২ নম্বর আসামি রুমান মোল্যা মুঠোফোনে জানান, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সহস্রাইল পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান কামাল আহমেদের সাথে ঝামেলা চলে আসছে। তারই জের ধরে জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি ষড়যন্ত্র করে আমাদের সমর্থক কিবরিয়ার সাথে।

রবিবার বিকেলে কম্পিউটার দোকানদার কিবরিয়ার ভাইকে মারধর করলে আমরা এগিয়ে গেলে দুইপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে এলাকা শান্ত হয়।

তারা বলেন, এ ঘটনায় কোন ভাঙচুর হয়নি, ঘটনার পর চেয়ারম্যান ও তার ভাই মির্জা মিলন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর দুইটি ছবি কিনে এনে সেই ছবি ও চেয়ারম্যানের অফিস তারা নিজেরা ভাঙচুর করে আমাদেরকে ফাঁসিয়েছে।

চেয়ারম্যানের অফিসের সিসি ফুটেজ পরীক্ষা করলে সব রহস্য বের হবে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত চেয়ে বিচার চেয়েছেন। যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা, মানিক, রুমান, আশা চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমরা বুকে ধারন করে দল করে আসছি। তার ছবি ভাংচুর তো দুরের কথা আমাদের সামনে ছবি অবমানা করলে আমাদের রক্তে আগুন ধরে যায়।

এ ব্যাপারে শেখর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিএনপির কর্মীরা আমাকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। জাল জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে নিষেধ করায় তারা আমার কার্যালয়ে টাঙানো বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে গেছে। এছাড়া ড্রয়ারে রাখা হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে সংগৃহীত ২লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং বাজার বণিক সমিতির ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা লুট করেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তাহের বলেন, দ্রুত বিচার আইনে সোমবার এ ঘটনায় বোয়ালমারী থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আব্দুল্লাহ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলমান রয়েছে। মূল ঘটনা উদঘাটন করে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসে সহস্রাইল খেলার মাঠে একটি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নজরুল কাজী ও চেয়ারম্যান কামাল আহমেদের সাথে ঝামেলা চলছিলো।

ওই খেলাকে কেন্দ্র করে ওই মাসে কয়েকবার সংঘর্ষ বাধতে গেলে উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও স্থানীয় গন্যমান্যদের উপস্থিতিতে এলাকা শান্ত হয়।

ওই সময় এক পাশের খেলার আয়োজক ছিলেন ব্যবসায়ী নজরুল কাজী, সদ্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ইস্রাফিল মোল্যা, যুবলীগ নেতা রুমান মোল্যাগং একই মাঠে অপরপাশের খেলার আয়োজক ছিলেন শেখর ইউপির চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজাগং।